মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৩

মানুষ মানুষের জন্যে


সীতা রানীর গল্প

 সীতা রানী বয়স ৩২, গ্রাম নিয়ামতপুর , উপজেলা পীরগঞ্জ, জেলা - ঠাকুর গাঁও একজন গরীব মহিলা যার স্বামী একজন দিনমুজুর চারটি মেয়ে স্কুলে যায় এবং এদের মধ্যে দুইজন মেয়ে গুডনেইর্বাস বাংলাদেশ (জিএনবি) নামক একটি বেসরকারী আর্ন্তজাদিক সংস্থার সাহায্য সহযোগীতায় লেখাপড়া করে আসছে সীতা রানী  জিএনবি পরিচালিত পীরগঞ্জ কৃষক সমবায় সমিতির একজন স্বক্রীয়  সদস্য বড় মেয়ে মামনি রায় সপ্তম  শ্রেনীর ছাত্রী প্রতিদিন মেয়েটি মলিন চেহারায় স্কুলে আসেন  যাহা একদিন তার শ্রেনী শিক্ষকের নজরে আসে কারণ জানতে চাইলে সে বলে তার মা অসুস্থ্য এবং এমন রোগে আক্রান্ত যাহা চিকিৎসা করার সামর্থ্য তাদের নেই অর্থা তার মার হৃতপিন্ডের একটি বাল্ব নষ্ট হয়েগেছে

বিষয়টি জিএনবি এর স্থানীয় কর্মকর্তাদের নজরে আসে এবং তারা প্রথমেই সীতা রানীকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতারে প্রেরণ করেন ডা. অমল কুমার চৌধুরী পরীক্ষা নীরিক্ষা করে রোগীকে ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ডা. এসএএম সবুর সাহেবের নিকট পাঠান ডা. সবুর পরীক্ষা নীরিক্ষা করে সিদ্ধান্তে আসেন যে সিতা রানীর হৃতপিন্ডে বিকল বাল্বটি পরিবর্তন  করে নতুন বাল্ব প্রতি স্থাপন করতে হবে
জিএনবি প্রধান কার্যালয় ঢাকা সীতা রানীকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ঢাকা থেকে ,৭৮,০০০ টাকা ব্যয় করে গত অক্টোবর ২০১৩ তারিখে অপারেশন করান জিএনবি পরিচালিত পীরগঞ্জ কৃষক সমবায় সমিতি বীরগঞ্জ মহিলা সমবায় সমিতি মোট টাকার শতকরা ৮৭ ভাগ বহন করেন বাকী টাকার % সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি, % রোগীর পরিবার এবং % গুডনেইর্বাস বাংলাদেশ এর স্থানীয় কর্মকর্তা কর্মচারীগণ বহন করেন
সকলের অংশগ্রহনে জয় হলো মানবতার ,জয় হলো সমবায় সমিতির হাঁসী ফোটলো সীতা রানীর মেয়ে এবং স্বামীর মুখে সীতা রানী এবং তার পরিবার প্রর্থনা করলেন জিএনবির কান্ট্রি ডিরেকটর , ম্যানেজিং ডিরেটর, অপারেশনাল ডিরেকটর পীরগঞ্জ অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মীদের জন্য যারা সীতা রানীর নতুন জীনব পেতে সহায়তা করলেন প্রসঙ্গ ক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে যে জিএনবি বাংলাদেশে ১৩ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭,০০০ শিশু এবং তাদের পরিবারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমবায় সমিতি পরিচালনা, নিরাপদ পানি লেট্রিন ব্যবহারের সুযোগ মহিলা উন্নয়নে ১৯৯৬ সন থেকে  কাজ করে আসছে
গত ২০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখ বিকাল ৪টা সময় সীতা রানী সুস্থ্য দেহে হাসপাতাল থেকে বেড় হয়ে তার ছোট ভাই এর সাথে হাসপাতালে নিকটেই তার মামার বাসয় উঠেন তিন দিন পর অপারেশনের সেলাই কেটে দিলে বাড়ী ফিড়ে যাবেন

বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৩

শিশুবিবাহ প্রতিরোধে সেপ্টেম্বর মাসে গুডনেইবারস বাংলাদেশ এর সাফল্য



শিশু পরিষদের সহযোগিতায়  নুপুরের বিবাহ রোধ :


নুপুর আক্তার
মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও দারিদ্রতার কারণে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী  নুপুরের অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো মাত্র ১১ বছর বয়সে তার বিয়ে ঠিক করা হয় সমবায় সমিতির সদস্যের মাধ্যমে গুডনেইবারস বাংলাদেশ ঘাটাইল প্রজেক্ট অফিসে শিশুটির বিয়ের খবর আসলে এই প্রকল্পের শিশু পরিষদের সদস্যরা এবং অফিসের কমীবৃন্দ গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ নুপুরদের বাড়িতে যায় তার পরিবারের সদস্যদের সাথে শিশু বিবাহের শারিরীক মানসিক ক্ষতির কথা তুলে ধরে অবশেষে তার বাবা-মা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন তারা তাদের মেয়েকে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে কথা দেন নুপুর এখন পূর্বের চেয়ে আরো মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করছে




বিয়ের আসর থেকে রক্ষা করা গেল মীম খাতুনকে :

মীম খাতুন
লেখাপড়ায় মেধাবী মীম জানতেও পারেনি তার জীবনে বেড়ে ওঠার স্বপ্নের পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে হঠাৎ করে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিলে উদ্বিগ্ন হন গুডনেইবারস বাংলাদেশ ঘাটাইল স্কুলের শিক্ষক/শিক্ষিকারা কমিউনিটি ফেসিলিটেটর এর মাধ্যমে জানা যায় যে ২৭ সেপ্টেম্বর তার বিয়ে ঠিক হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বরে সিআরসি সদস্যবৃন্দ, স্কুলের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা, অফিসের কর্মীবৃন্দ এবং ইউনিয়ন মেম্বার মীমদের বাড়ি যান বাড়ি পরিদর্শনে তারা গিয়ে দেখেন, বিয়ের গেট সাজানো হয়েছে, আত্মীয় স্বজন সকলে চলে এসেছে এবং সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে শিশু পরিষদের সদস্যবৃন্দ, স্কুলের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা প্রকল্পের কর্মীবৃন্দ তার বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলেন প্রাথমিক পর্যায়ে তারা বিয়ে বন্ধ করতে রাজী হচ্ছিলেন না শিশু পরিষদের সদস্যবৃন্দ, স্কুলের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা অফিসের কর্মীবৃন্দ অনেক বোঝানোর পরে মীমের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার বাবা মা মীমের বিয়ে বন্ধ করেছে মীম এখন আগের মত নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে

ইভ-টিজিং, অতপর শিশু হালিমার বিবাহের চেষ্টা :

হালিমা খাতুন
কৃষিকাজ করে অনেক কষ্ট করে সংসার চালালেও ঘাটাইল সু প্রতিবেশী প্রাইমারি স্কুল এর ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী হলিমার বাবা জামাল বাদশার হালিমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন স্বপ্ন পুরণে হালিমাও এগিয়ে চলছিল কিন্তু কিছু দিন ধরে স্থানীয় একটি ছেলে হালিমাকে বিরক্ত করে আসছিল রাস্তায় বের হলেই তাকে আতংকে চলাফেরা করতে হতো তার পরিবার অনেক চেষ্টা  করেও সে আতংক থেকে রেহাই পায়নি বরঞ্চ দিনে দিনে জ্বালাতনের মাত্রাটা বেড়েই চলছিল এর প্রেক্ষিতে হালিমার বাবা মা তাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এই খবর পেয়ে গুডনেইবারস বাংলাদেশ ঘাটাইল প্রকল্পের কর্মীগণ এবং শিশু পরিষদের সদস্যরা হালিমার বাড়ি পরিদর্শন করে তার পরিবারের সাথে কথা বলে শিশু পরিষদের সদস্যরা বলে- “দারিদ্রতার কারণে হালিমার বিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু বিয়ের পরে যে আরো সমস্যা সৃষ্টি হবে অল্প বয়সে বিয়ে দিলে কিকি সমস্যা হয় তা তার পরিবারের কাছে তুলে ধরা হয় পরবর্তীতে হালিমার পরিবার হালিমার বিয়ে দেবে না বলে কথা দিয়েছে হালিমা এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে

শিশু রুবির বিয়ে রোধ :

রুবি
পারিবারিক অস্বচ্ছলতার জন্য বিয়ে দেয়া হচ্ছিল ১১ বছর বয়সী ৪র্থ শ্রেনির ছাত্রী রুবিকে শিশু পরিষদের এক সদস্যের কাছ থেকে খবর পেয়ে জিএনবি মৌলভীবাজার প্রজেক্টের কর্মীরা  শিশু পরিষদ সদস্যদের নিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর রুবিদের বাসায় যান এবং শিশু বিবাহের কুফলগুলো তাদের বুঝিয়ে বলেন পরিবারের সদস্যরা তাদের ভূল বুঝতে পারে এবং বিয়েটি বন্ধ করে