সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে গুডনেইবারস বাংলাদেশের সাফল্য : হ্যাপী আক্তারের গল্প


হ্যাপী আক্তার

টিউবওয়েল মিস্ত্রী আব্দুল হামিদের দিন শুরু হয় তার পরিবারের সদস্যের মুখে -মুঠো ভাত তুলে দেবার দুঃশ্চিন্তা নিয়ে। পরিবারের ভরন-পোশন নিয়ে  দুঃশ্চিন্তার সাথে সাম্প্রতিক যুক্ত হয়েছে তার ১৩ বয়সী মেয়ে হ্যাপী আক্তারের বিয়ের চিন্তা। প্রচলিত ধারনা অনুযায়ী দরিদ্র পরিবারে ১৩ বছর বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়স। মেয়েকে বিয়ে দেয়া মানে একটি খাবারের মুখ কমে যাওয়া। আর তাছাড়া বাড়তি বয়সের মেয়েদের নিয়ে সমাজে বাড়তি দুঃশ্চিন্তা-কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। আব্দুল হামিদের উদ্দ্যেগের সাথে যুক্ত হলো প্রতিশেীর প্ররোচনা। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন এবং যথারীতি পাত্র খুজে পেলেন।

গুলসান প্রকল্পের শিশু পরিষদের সদস্যরা বিগত বছর যাবত এলাকায় শিশু বিবাহ রোধে কার্যকারী মিকা পালন করে আসছে। শিশু বিবাহের সংবাদ শুনলেই শিশু পরিষদের সদস্যরা ছুটে যায় সেখানে। এলাকার গন্য-মান্য ব্যক্তি এবং প্রকল্প কর্মীদের সহযোগিতায় রোধ করে শিশু বিবাহ নামের সামাজিক ব্যাধিকে। হ্যাপী আক্তার জিএনবি পরিচালিত ভাটারা স্কুলের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী। তার বিষন্নভাব তার সহপাঠীদরেকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারা খোজ নিয়ে জানতে পারে হ্যাপীর বাবা তার বিয়ে ঠিক করেছে।সংবাদটি শুনে শিশু পরিষদের সদস্যরা সমবায় সমিতির সভাপতি, কয়েকজন প্রকল্প কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকে নিয়ে যান হাপীদের বাসায়। হ্যাপীর পরিবার তখন তার বিয়ের আয়োজন করায় ব্যাস্ত। শিশু পরিষদর সদস্যদের আগমনে কিছুটা বিরক্ত হন তারা।

শিশুরা হ্যাপীর বাবা-মাকে এত অল্প বয়সে বিয়ে দেবার শারিরীক মানষিক ক্ষতি তুলে ধরেন।  তারা বোঝায় যে এত অল্প
বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে শিশু পরিষদ
বয়সে  বিয়ে তাদের মেয়ের মৃত্যূ ডেকে আনতে পারে। তাছাড়া অল্প বয়সে বিয়ে হলে আগত সন্তানেরা নানা রকম শারিরীক জটিলতায় ভোগে এমনকি তার মৃত্যূও হতে পারে।এই বয়সে হ্যাপীর স্কুলে যাওয়ার কথা। লেখাপড়া সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি পরিবারেও অবদান রাখতে পারবে। অবশেসে তার বাবা-মা বুঝতে পারেন তারা তাদের মেয়েকে মৃত্যূ দিকে ঠেলে দিচ্ছিলেন। নিজের মেয়ের সুন্দর ভবিস্যতকে নিজের হাতে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।

গুলসান প্রকল্পের শিশু পরিষদের সদস্যদের প্রচেষ্টায় বন্ধ করা গেল শিশু বিবাহটি। হ্যাপী এখন নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে। পড়ালেখায় এখন আগের থেকে অনেক মনযোগী, স্বপ্ন দেখছে সুন্দর আগামীর। "আমার লেখাপড়া করতে ভালো লাগে। পড়ালেখা শিখে আমি অনেক বড় হতে চাই, নিজের পায়ে দাড়াতে চাই।" -  হাসি মুখে বল্ল হ্যাপী আক্তার।




মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৩

“Long Term strategic plan and 3rd quarter M&E 2013” – সম্মেলন উপলক্ষ্যে কান্ট্রি ডিরেক্টরের বাণী


“Long Term strategic plan and 3rd quarter M&E 2013” – সম্মেলন উপলক্ষ্যে অপারেশনাল ডিরেক্টরের বাণী


ফ্রান্সিস মন্ডল
অপারেশনাল ডিরেক্টর
গুড নেইবারস্ বাংলাদেশ



২০১৩ -এর ৩য় ত্রৈমাসিক সম্মেলনে উপস্থিত সকলকে অপারেশনাল ডিপার্টমেন্টের সকলের পক্ষ থেকে প্রীতি শুভেচ্ছা জানাই ধন্যবাদ জানাই সৃষ্টিকর্তাকে জিএনবি- এর প্রতি তাঁর অশেষ মহিমা প্রকাশ কৃপা দানের জন্য 

গুডনেইবারস বাংলাদেশ বিগত ১৭ বছর দরিদ্র শিশূ নারীদের নানাবিধ সেবা দানের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ৯টি জেলায় শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, যুব নারী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দেখা গিয়েছে দীর্ঘদিন এহেন সেবাদানের মাধ্যমে লক্ষিত জনগোষ্টির সত্যিকার স্থায়ীভাবে ভাগ্য উন্নয়ন ঘটানো ততটা সম্ভব হয়নি তাই বর্তমানে গুডনেইবারস বাংলাদেশ তার সুবিধাভোগিদের "টেকসই উন্নযন" সাধন তথা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দানের জন্য উন্নয়ন কার্যক্রম কিছুটা ঢেলে সাজিয়েছে আর কার্যক্রম, দুটি লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পরিচালিত হচ্ছে; তা হলো- শিশু অধিকার এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণ লক্ষ্যে আমরা বর্তমানে সমবায় সমিতির মাধ্যমে আয়-বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে নারীর ক্ষমতায়ন, সিআরসি এবং যুব উন্নয়নমূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি ভবিষ্যতে সমবায় সমিতির মাধ্যমে আয়-বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমের উপর বিশেষ জোর দেয়া হবে তাছাড়াও এখন থেকে পরীক্ষামূলকভাবেগ্রীন-গ্রোথ’’ প্রোগ্রামের আওতায়বায়ো-গ্যাস এবং সৌরশক্তি’’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে; যা ২০১৪ সাল থেকে পরিকল্পনা মাফিক পুরোদোমে প্রায় সকল প্রজেক্টে শুরু করা হবে

অপারেশনাল ডিপার্টমেন্ট ত্রি-বার্ষিক (২০১৪-২০১৬) পারিকল্পনা প্রণয়ন করেছে; যেটি ৩য় ত্রৈমাসিক কনফারেন্সে (- নভেম্বর ২০১৩) সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হচ্ছে পরিকল্পনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলে সুচিন্তিত মতামত দিতে পারবেন পরিকল্পনাটি ফাইনাল প্রকাশিত হবার পর প্রতিটি প্রজেক্ট এবং রিজিওনাল অফিস তাদের নিজ নিজ ত্রি-বার্ষিক (২০১৪-২০১৬) পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে অতঃপর তা কার্যকরভাবে পালন করবে 

বছর নীলফামারি জেলায় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে পর্যায়ক্রমে ২০১৪-২০১৬ সালে আরো ৩টি নতুন প্রজেক্ট শুরু করা হবে  আমরা জানি শিশুরা দেশের ভবিষৎ, নারীরা উন্নয়নের সহযোদ্ধা এবং যুব-সমাজ আমাদের চালিকাশক্তি তাই তিন শ্রেণীর বিশাল জনগোষ্টিকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে জনসম্পদে পরিণত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য বাস্তবভিত্তিক সু-নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গাইড-লাইন প্রণয়ন করতঃ সকল প্রজেক্টে সাহসিকতা আন্তরিকতার সহিত কার্যক্রম শুরু করতে হবে এবং ধীরে ধীরে এর গুণগতমান নিশ্চিৎ করতে হবে তবে আমাদের দরিদ্র সুবিভাভোগিদের নিয়ে সমবায় সমিতির মাধ্যমে আয়-বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা অনেকটা কঠিন কেননা তাদের অধিকাংশই একদিকে দরিদ্র, অন্যদিকে লেখাপড়া না জানা অসচেতন জনগোষ্ঠি আর তাই গুডনেইবারস মনে করে এখানেই তাদের সত্যিকার কাজের মাধ্যমে প্রকৃত-সেবা করার উপযুক্ত স্থান সুতরাং গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম প্রকৃত অর্থে কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে তা যাচাই করার জন্যই এবারে রিজিওনাল অফিসগুলো ৩য় ত্রৈমাসিক কার্যক্রম মূল্যায়ন সম্পন্ন করতঃ রিপোর্ট প্রস্তত করেছে আমরা বিশ্বাস করি রিপোর্ট সকলের ভুলক্রটি সংশোধন পূর্বক আন্তরিক সেবা দানের মাধ্যমে সুবিধাভোগিদের “টেকসই উন্নযন” নিশ্চিৎ করবে

উন্নয়নে সহযাত্রী সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ভালবাসা জানিয়ে ---